
গ্রামবাংলা নিউজ:
সাতক্ষীরায় টানা ভারী বর্ষণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শহর ও গ্রামে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের জমি।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলার ৮৮ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এরই মধ্যে ৩০-৪০ শতাংশ জমিতে রোপণ সম্পন্ন হলেও ভারী বৃষ্টিপাতে অন্তত ৩ হাজার হেক্টর জমির ধান, ১৫০ হেক্টর বীজতলা এবং ৫০০ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজিখেত তলিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ৪ থেকে ৫ দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
সদর উপজেলার যুগরাজপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, ২০ বিঘা জমিতে ধান চাষের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এর মধ্যে আট বিঘায় চারা রোপণ শেষ হলেও সব জমি এখন তিন-চার ফুট পানির নিচে। বিলের মধ্যে খাল উন্মুক্ত না থাকায় পানি নামছে না। রোপা আমন আর সবজিখেত ডুবে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
টানা বৃষ্টিতে শুধু কৃষকরাই নয়, চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষও। শহরের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ভ্যানচালক আব্দুল হামিদ বলেন, পানি জমে রাস্তাঘাট ডুবে গেলে আমরা ভ্যান নিয়ে বের হতে পারি না। সারাদিন ভ্যান না চালাতে পারলে সংসার চলে না। বৃষ্টি হলে যেন জীবনটাই থমকে যায়।
নগরঘাটা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, চার বিঘা জমিতে চাষ করা ঢেঁড়স, বরবটি, পটোল, ওল, মুখীকচুসহ প্রায় ৩ লাখ টাকার সবজি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টিতে জেলার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর রোপা আমন ধান, ১৫০ হেক্টর বীজতলা ও ৫০০ হেক্টর সবজি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক হিসাব নির্ধারণে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে।
স্থানীয় কৃষক ও নাগরিকদের অভিযোগ, জলাবদ্ধতার মূল কারণ হলো বিলের খালগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া ও সঠিক নিষ্কাশনব্যবস্থার অভাব। তারা মনে করছেন, সরকারি সহায়তা ছাড়া এ ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।