হেলাল উদ্দীন, বাগমারা:
রাজশাহীর বাগমারায় তাহেরপুর কলেজের প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণের প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও তাহেরপুর পৌরসভার প্রশাসক মাহবুবুল ইসলামকে অপসারনের দাবীতে এলাকার সচেতন মানুষ, ব্যবসায়ী ও তাহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যানারে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাহেরপুর হরিতলা মোড়ে এ প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়। তবে মানববন্ধনে করা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক মাহবুবুল ইসলাম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায় সরকারের আওতায় ভিপি সম্পত্তি গুলো পৌরসভাকে লীজ দেন। দীর্ঘদিন থেকে ওই সম্পত্তিতে পৌরসভার পক্ষ থেকে মার্কেট নির্মানের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সাথে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেয়া হয়। সেই মোতাবেক পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ভাড়া আদায় করে থাকেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই জাতীয়তাবাদী বিএনপির লোকজন মার্কেটটির ভাড়া বন্ধ করে দিয়ে অবৈধ ভাবে দখলের চেষ্টা করে। তাতেই বাধ সাধেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক মাহবুবুল ইসলাম। তিনি বিএনপির লোকজনকে মার্কেটটি দখলে বাঁধা দিলে তারা লীজ নেয়ার জন্য আবেদন করেন।

পৌরসভার নির্মিত মার্কেটটি লীজ প্রদান না করায় তা মেনে নিতে পারেননি স্থানীয় বিএনপি’র এক নেতা ও তার বোন। তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও এলাকার সচেতন মানুষকে দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে পৌরসভার প্রশাসক (ইউএনও) এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাহেরপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মতলেবুর রহমান ও সহকারি প্রকৌশলী মোঃ হাসান জানান, পৌরসভার জায়গায় পৌরসভার অর্থায়নে মার্কেট নির্মাণ করে ব্যবসায়ীদের ভাড়া দেওয়া হয়। এখন আমাদের হুমকি দিয়ে তারা(কলেজ কর্তৃপক্ষ) জোর করে ভাড়া আদায় শুরু করায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম বলেন, উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায় সরকারের প্রচুর পরিমান ভিপি সম্পত্তি রয়েছে। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী জনসেবার জন্য তাহেরপুর পৌরসভা ও কলেজের নামে পুকুর গুলো লীজ দেয়া হয়েছে। মার্কেটটির ভাড়া থেকে পৌরসভা কর্মচারী ও এলাকার অসহায়, দুঃস্থ মানুষদের সহযোগিতার জন্য পৌরসভার নামে লীজ দেয়া হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য পৌরসভার লীজ বাতিল করে কলেজের নামে নিতে আবেদন করেন। যেহেতু কলেজ স্বয়ংসম্পূর্ণ তাই লীজটি তাদের না দিয়ে পৌরসভার নামে দেয়া হয়। এখানে কলেজ বা কারোরই সাথে বিমাতাসূলভ আচরণ করা হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তাহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দায়িত্ব প্রাপ্ত অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম শান্তি বলেন, গত ২২ এপ্রিল আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে লিখিত অঙ্গিকার দিয়ে এসেছি। তাহেরপুর পৌরসভার নির্মিত মার্কেটের ৪১টি দোকানে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার ভাড়া আদায় করবে না। এটি পৌরসভার মার্কেট তারাই ভাড়া আদায় করবে। এ মানববন্ধনের বিষয়ে কিছুই জানি না।